নামাযের ফরজ সমূহের দালিলিক আলোচনা

নামাযের ফরজ সমূহের দালিলিক আলোচনা


নামাযের ৩নং ফরয হচ্ছে, নামাযের স্হান পাক-পবিত্র হতে হবেঃ

নামায আদায় করার জন্য নামাযের স্হান অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। পবিত্র স্হান ছাড়া নামায আদায় করলে নামায হবে না। হাদীসে এসেছে, সমস্ত পৃথিবীটা মসজিদ। অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত পবিত্র যায়গায় নামায আদায় করা যাবে। কিছু কিছু যায়গা ব্যতিক্রম রয়েছে যা হাদীসে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে।

মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন,

আর স্মরণ করো তখনকার কথা যখন আমি এই গৃহকে (কা’বা) লোকদের জন্য কেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল গণ্য করেছিরাম এবং ইবরাহীম যেখানে ইবাদাত করার জন্য দাঁড়ায় সে স্থানটিকে স্থায়ীভাবে নামাযের স্থানে পরিণত করার হুকুম দিয়েছিলাম। আর ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে তাকীদ করে বলেছিলাম, আমার এই গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকূ’-সিজদাকারীদের জন্য পাক-পবিত্র রাখো।

{সূরা বাকারা, আয়াতঃ ১২৫}

হাদীসে এসেছে,

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার জন্য (অর্থাৎ আমার উম্মাতের জন্য) সমগ্র জমিনকে পবিত্র এবং মসজিদ (সাজদাহ্‌র স্থান) বানানো হয়েছে।

{আবু দাউদ শরীফ, হাঃ ৪৮৯}

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহল্লায় মাসজিদ গড়ে তোলার, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ও এতে সুগন্ধি ছড়াবার হুকুম দিয়েছেন।

{আবূ দাঊদ ৪৫৫, তিরমিযী ৫৯৪, ইবনু মাজাহ্ ৭৫৮, সহীহ আত্ তারগীব ২৭৯}

অন্য পোস্টঃ 
নামাজের কাতারে ফাঁক বন্ধ করার মর্যাদা

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাসজিদে (নাবাবীতে) ছিলাম। এমন সময় জনৈক বেদুইন এসে মাসজিদে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে লাগল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহাবীগণ বলে উঠলেন, থাম, থাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তাকে প্রস্রাব করতে বাধা দিও না, তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দাও। তাই সহাবীগণ তাকে ছেড়ে দিলেন। সে প্রস্রাব করা শেষ করলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে বললেন, এ মাসজিদসমূহে প্রস্রাব ও অপবিত্রকরণের কোন কাজ করা জায়িয নয়। বরং এটা শুধু আল্লাহর যিক্‌র, সলাত ও কুরআন পাঠের জন্য। (রাবী বলেন) তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঠিক এ বাক্য বা অনুরূপ কিছু বলেছেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে উপস্থিত একজনকে নির্দেশ দিলেন সে এক বালতি পানি এনে (প্রস্রাবের উপর) ঢেলে দিল।

{বুখারী ১২২১, মুসলিম ২৮৫, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪১৪২, ইবনু মাজাহ্ ৫২৮}

কবরস্হান ও গোসলখানায় নামায আদায় করা নিষেধঃ

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্ববরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া দুনিয়ার আর সব জায়গায়ই মাসজিদ।

{আবূ দাঊদ ৪৯২, তিরমিযী ৩১৭, আহকামুল জানায়িয ৮৭ পৃঃ, দারিমী ১৪৩০}

উটের খোয়াড়ে নামায আদায় করা নিষেধঃ

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উটের আস্তাবলে সলাত আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ তোমরা উটের আস্তাবলে সলাত আদায় করবে না। কারণ তা শাইত্বানের আড্ডাখানা।

{আবু দাউদ শরীফ, হাঃ ৪৯৩}

নামাযের ফরজ সমূহের দালিলিক আলোচনা পর্বঃ ০১
পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
No Comment
Add Comment
comment url