দুনিয়াদারদের পরিনতি হবে অনেক ভয়াবহ
পৃথিবীতে সবচেয়ে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্হ লোক কারা?
পৃথিবীতে এমন লোকেরাও আছে যাদের সব কাজ হয় দুনিয়ার জন্য। আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য তাদের কোন কাজ হয় না। অথচ তারাই নিজেদেরকে ভালো পথের পথিক মনে করে। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেনঃ
হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, আমি কি তোমাদের বলবো নিজেদের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত কারা?
তারাই, যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম সবসময় সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত থাকতো এবং যারা মনে করতো যে, তারা সবকিছু সঠিক করে যাচ্ছে।
এরা এমন সব লোক যারা নিজেদের রবের নিদর্শনাবলী মেনে নিতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর সামনে হাযির হবার ব্যাপারটি বিশ্বাস করেনি। তাই তাদের সমস্ত কর্ম নষ্ট হয়ে গেছে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে কোন গুরুত্ব দেবো না।
[সূরাঃ কাহাফ, আয়াতঃ ১০৩, ১০৪, ১০৫]
মানুষকে আল্লাহ তাআলা তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধী করে সৃষ্টি করেছেন। সেই মানুষের কাজ হবে সর্বাবস্হায় তার রবকে সন্তুষ্ট করা। কিন্তু সে বেমালুম ভুলে গেছে পৃথিবীতে তার করনীয় কি? সে আল্লাহর বিধানের বিপরীত দাঁড়িয়ে গেছে। তার সমস্ত কাজকর্ম দুনিয়ার জন্য নিবেদিত। নিজের ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে সে এমন কোন কাজ নাই যা করে না। অথচ তার উচিত ছিল ক্ষমতার পিছনে না ছুটে বরং আল্লাহর পথে সময় ব্যয় করা। এই মানুষ দুনিয়ার পিছনে ছুটতে ছুটতে অবশেষে এমন জালিমে পরিনত হয় যে, তার আর কোন বিবেক বুদ্ধি কাজ করে না। সে হয়ে পড়ে উদভ্রান্ত।
অবশেষে যে কাজেই করুক না কেন সেই কাজকে সে সঠিক মনে করতে থাকে। ভালো কে ভালো মন্দকে মন্দ বলার মত বিবেক কাজ করে না। তাকে জুলুম থেকে ফিরে আসতে বলা হলে সে তখন সর্বশক্তি দিয়ে সেই ব্যক্তিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এই ধরনের লোকেরা দুনিয়া ও আখেরাতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে কোন কাজেই আসবে না তাদের এইসব আমল। কারণ, তারা পৃথিবীতে থাকতে সত্যের বিপরীত দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
কিয়ামতের মাঠে এসব লোকের কোন ওজন কায়েম করা হবে না, পৃথিবীতে সে যত ওজনওয়ালাই হোক না কেন! তার আমলনামায় কোন সৎকর্মই অবশিষ্ট থাকবে না। কারণ, দুনিয়ায় সে এগুলো শেষ করে ফেলেছে।
আর নিজের অন্তরকে তাদের সঙ্গলাভে নিশ্চিন্ত করো যারা নিজেদের রবের সন্তুষ্টির সন্ধানে সকাল-সাঁঝে তাঁকে ডাকে এবং কখনো তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরাবে না। তুমি কি পার্থিব সৌন্দর্য পছন্দ করো? এমন কোন লোকের আনুগত্য করো না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির কামনা-বাসনার অনুসরণ করেছে এবং যার কর্মপদ্ধতি কখনো উগ্র, কখনো উদাসীন।
[সূরা কাহাফ, আয়াতঃ ২৮]
এখন আমাদের কর্তব্য হচ্ছে ঐ সমস্ত লোকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলা যারা পৃথিবীতে সকাল সন্ধ্যা একমাত্র আল্লাহকে ডাকে। তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনকে নিজের মাকসাদ বানিয়ে নেয়। তাহলে সফলকাম হওয়া যাবে।